বাগেরহাট ই-সেন্টার

বাগেরহাট দক্ষিণ পশ্চিম বাংলাদেশের একটি জেলা। এটি খুলনা বিভাগ এর অন্তর্গত। অবস্থান ও আয়তন বাগেরহাট জেলার উত্তরে গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলা, পশ্চিমে খুলনা জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং পূর্বে পিরোজপুর ও বরগুনা জেলা। ২২৹ ৩২’ থেকে ২২৹ ৫৬’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯৹ ৩২’ থেকে ৮৯৹ ৪৮’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে বাগেরহাট জেলার অবস্থান। এ জেলার আয়তন ৫৮৮২.১৮ বর্গকিলোমিটার; তারমধ্যে ১৮৩৪.৭৪ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল, ৪০৫.৩ বর্গকিলোমিটার জলাশয় এবং অবশিষ্টাংশ নিম্ন-সমভূমি। বাগেরহাট জেলা সদরের অধিকাংশ ভৈরব নদীর পশ্চিম তীরে এবং শহরের বর্ধিত অংশ ভৈরবের দক্ষিণ প্রবাহ দড়াটানার পশ্চিম তীরে অবস্থিত।
ইতিহাস বাগেরহাটে প্রথম বসতি স্থাপন করে অনার্য শ্রেণীর মানুষ। এদের মধ্যে রয়েছে ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চল হতে আসা অস্ট্রিক ও দ্রাবিড় এবং মঙ্গোলীয় আলপাইন প্রভৃতি। এ অঞ্চলে অনার্য প্রভাবের বড় নিদর্শন হল পৌন্ড্রক্ষত্রিয় সম্প্রদায়। এ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে রামপাল উপজেলায় এ সম্প্রদায়ের লোক বেশি বাস করে। পৌন্ড্র শব্দের অপভ্রংশ পুড়া বা পোদ। পৌন্ড্র শব্দটি দ্রাবিড় শব্দজাত যার অর্থ ইক্ষু। অনার্য শ্রেণীভূক্ত নমশূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষ ও বাগেরহাটে প্রচুর বাস করে। এদের পূর্ব নাম চন্ডাল। এরা বরেন্দ্র অঞ্চল হতে এসে এখানে বসবাস শুরু করে। এ ছাড়া বাগেরহাটে এক শ্রেণীর মৎস্য শিকারী বা জেলে বসবাস করে যাদের আদি পুরুষ নিগ্রোবটু(নিগ্রয়েড) । এরা ভারত উপমহাদেশের আদিমতম অধিবাসী। খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে মধ্য এশিয়া হতে এ অঞ্চলে আর্য তথা আদি নর্কিভ বা ইন্ডিভদের আগমণ ঘটে। আর্য-অনার্যের শোণিত ধারাই এ অঞ্চলের অধিবাসীদের মধ্যে ।বস্ত্ত পূজারী অনার্যগণ কৌমধর্ম (টাইবাল ধর্ম) অনুসরণ করতো। শক্তি পূজারী আর্যরা নিয়ে আসে বৈদিক ধর্ম। সূর্য ও অগ্নি ছিল তাদের অন্যতম উপাস্য। আর্য ও অনার্য উভয় ধর্মের আচার অনুষ্ঠান রীতিনীতির মিশ্রণে প্রতিষ্ঠিত হয় হিন্দুধর্ম। বাগেরহাটের অতি প্রাচীন স্থান পানিঘাটে প্রাপ্ত কষ্টি পাথরের অষ্টাদশ ভূজা দেবীমূর্তি, মরগা খালের তীরে খানজাহান আলী (রঃ) এর পাথর ভর্তি জাহাজ ভিড়বার স্থান জাহাজঘাটায় মাটিতে গ্রোথিত পাথরে উৎকীর্ণ অষ্টাদশ ভূজা মহিষ মর্দিনী দেবীমূর্তি, চিতলমারী উপজেলাধীন খরমখালি গ্রামে প্রাপ্ত কৃষ্ণ প্রস্তরের বিষ্ণু মূর্তি ইত্যাদি নিদর্শন এখানে হিন্দু সভ্যতা বিকাশের পরিচয় বহন করে। ১৪৫০ খ্রিঃ খানজাহান আলী (রঃ) খাঞ্জেলী দীঘি খনন করান। এ সময় অনন্য সাধারণ ধ্যাণী বৌদ্ধমূর্তি পাওয়া যায়। ১৯৭১ সালে বৌদ্ধ পুরোহিত বিশুদ্ধানন্দ মহাথেরো পাল আমলে নির্মিত ঐ বৌদ্ধমূর্তিটি কমলাপুর বৌদ্ধ বিহারে সংস্থাপন করেন। এটা এ অঞ্চলে বৌদ্ধ প্রভাবের পরিচয় বহন করে।
বিখ্যাত পণ্য : ষাটগম্বুজ মসজিদ, চিংড়ী, সুপারি|
আমাদের পন্য
অবস্থান মানচিত্র
